৪৫ জেলার দলীয় কার্যালয়ে করোনা হেলপ সেন্টার খুলেছে বিএনপি

স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক :
শুক্রবার সকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির করোনাভাইরাস সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এতথ্য জানিয়ে বলেন, সারাদেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা একেবারে হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দলের পক্ষ থেকে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেব। আমরা প্রতিটা জেলায় দলের কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন-ড্যাবের সহযোগিতায় করোনা হেলপ সেন্টার খুলেছি। এ পর্যন্ত আমরা ৪৫টি জেলায় সেন্টার খুলে ফেলেছি।

টুকু বলেন, সব মিলিয়ে আমাদের ৫৩টা হয়ে যাবে। আশা করি ঈদের আগেই ৬৪ জেলায় শেষ করতে পারব। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা জনগণের পাশে থাকব।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জেলার হেলপ সেন্টারগুলো থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থাও থাকবে। পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে জনগণকে পরামর্শ সেবা এবং ওষুধ সরবারহ করা হবে।

গত ১৪ জুলাই বরগুনায় হেলপ সেন্টার খোলার পর বৃহস্পতিবার পুলিশ গিয়ে তা ‘বন্ধ করে দিয়েছে’ বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা টুকু।

তিনি বলেন, সরকারকে বলব, আমরা জনগণকে সহায়তা করার জন্য কাজ করছি। দয়া করে এই সহায়তাটা করতে দেন।

সরকার ঈদের আগে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করায় দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ‘ব্যাপক’ মাত্রা পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন টুকু।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের যে ধরনটি এখন বেশি ছড়াচ্ছে তা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। করোনাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেছে, আমাদের দেশে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত না হয়- এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত।

টুকু বলেন, ঈদ উপলক্ষে লকডাউন উঠিয়ে দিল এবং মানুষকে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। সরকারের এটা পরিকল্পনাবিহীন উদ্যোগ। এবার কিন্তু করোনার বিস্তার ঢাকা না, গ্রামে। এই ঈদে সবাই বাড়ি যাবে, আবার সেখান থেকে যখন ঢাকায় ফেরত আসবে তখন সারা দেশে করোনার বিস্তার করার ব্যবস্থা করবে।

তিনি অভিযোগ করেন, গ্রামের মানুষ ওষুধ পাচ্ছে না, অক্সিজেন পাচ্ছে না, জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে শয্যা খালি না থাকায় দুর্ভোগ হচ্ছে।

শুক্রবার এই অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ, চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ, ফরিদপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ, ঝালকাঠি, নরসিংদী, গোপালগঞ্জে বিএনপির এই ‘হেলপ সেন্টারের’ উদ্বোধন করা হয়।

দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা প্রণোদনার অর্থ কোথায় যায়- সে প্রশ্ন তুলে টুকু বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছিলাম, লকডাউন সফল করতে হলে দরিদ্র, প্রান্তিক, কর্মহীন, দিন আনে দিন খায় মানুষকে কমপক্ষে তিনটা মাস ১৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে। সেটা সরকার করেনি। উনারা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। প্রণোদনাটা কোথায় দেয় আমরা কেউ জানি না। আপনারা যদি বস্তিগুলোতে গিয়ে দেখেন, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন প্রণোদনার টাকা তারা পায় কিনা। আমার মনে হয়, আপনারা সঠিক উত্তরটা পেয়ে যাবেন।

ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে আরও অংশ নেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সস্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.