চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিক্রি হওয়া সেই শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ

অন্যান্য

বিশেষ প্রতিনিধি :
চিকিৎসা খরচ ও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে বিক্রি করে দেওয়া শিশু জোবায়েরা আক্তার মিনাকে বাবা-মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। বুধবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে হাজীগঞ্জ থানায় শিশুটিকে তার মা-বাবার কোলে তুলে দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘চিকিৎসার খরচ জোগাতে শিশুসন্তান বিক্রি করলেন বাবা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। পরে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার ও হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবাইর সৈয়দের প্রচেষ্টায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে উদ্ধার করে তার মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার শেষে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক নিজাম তার বাবা-মায়ের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করেন।

হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক নিজাম বলেন, রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় ডিএমপি পুলিশের সহায়তায় রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তবে ওই সময় শিশুটিকে কিনে নেওয়া ব্যক্তিরা বাসায় ছিলেন না। তাদের কাজের মেয়ের কাছ থেকে শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড খাটরা-বিলওয়াই মজুমদার বাড়ির বাসিন্দা বশির মজুমদার। দুই কন্যা সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যায়। পরে রড লাগানো হয়। আর্থিক সংকটে সেই রড খুলতে পারছেন না তিনি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিওর কাছে আছে প্রায় ৫ লাখ টাকার ঋণ। চিকিৎসা খরচ ও ঋণের টাকা যোগাতে এক বছর বয়সী মেয়ে মিনাকে সোমবার চাঁদপুরে কোর্ট এফিডেভিট’র মাধ্যমে বিক্রি করেন তার বাবা।

সন্তানকে ফিরে পেয়ে মা আছমা বেগম বলেন, আল্লাহর মেহেরবানীতে মিনাকে আমার কোলে ফিরে পেয়েছি। বাবা বশির মজুমদার জানান, আমার বাচ্চা ফিরে আসায় আমার বুকটা ভরে গেছে। আমি অনেক আনন্দিত। হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ আমাকে সঙ্গে নিয়ে অনেক পরিশ্রম করে আমার সন্তানকে উদ্ধার করেছে। এজন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়ের সৈয়দ জানান, আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছি। এছাড়া তাদের যে আর্থিক সমস্যা রয়েছে তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ তাদের পাশে থাকবে। দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে এক লাখ টাকার যে বিষয়টি রয়েছে সেটা তারা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.