চট্রগ্রামে অথিতি সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাৎ মামলার বাদি অলি উদ্দিনকে হয়রানির অভিযোগ

অপরাধ

আহসান হাবীব :
আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পূর্বপরিচিতদের নিয়ে গঠন করেছিলেন সমবায় সমিতি। সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ করে আসছিলেন তারা।

কিন্তু সরলতার সুযোগ নিয়ে সমিতির তিন অংশীদার মিলে আত্মসাৎ করেন সমিতির ২১ লাখ ৮১ হাজার ৩৯২ টাকা। সমিতির অর্থ আত্মসাৎ করেই ক্ষান্ত হননি আসামিরা।

তারা সমিতির কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্রও সরিয়ে বিক্রি করে দেন এবং কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেন। অতিথি কর্মজীবী সমবায় সমিতির টাকা আত্মসাতের পর ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এমন অভিনব প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন মামলা তদন্তের পর অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

ভুক্তভোগী মো. অলি উদ্দিন হাওলাদার ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মেট্র্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ১ম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মো. অলি উদ্দিন হাওলাদার অতিথি কর্মজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি। আর অভিযুক্তরা হলেন অতিথি কর্মজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক মো. আব্দুল কালাম (৫৪), অর্থ সম্পাদক মো. ফজলুল হক কালু (৪৪), সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ (৩৯)। আসামিরা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ আল হেলাল।

তিনি বলেন, অতিথি কর্মজীবী সমবায় সমিতির মামলায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রাম মেট্র্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ২য় আদালতে চার্জ গঠনের জন্য রয়েছে।

অংশীদারদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে প্রতিকার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় এখন জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগী মামলার বাদী মো. অলি উদ্দিন হাওলাদার।

তিনি বলেন, আসামিরা নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের ২ মার্চ তারিখে মামলায় হাজিরা দিতে এসে আদালত প্রাঙ্গণে আমাকে মারধরও করেছে আসামিরা। এ ঘটনায় আমি কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। আসামিরা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভয় পিছু ছাড়ছে না আমাকে। তারা মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপ-পরিদর্শক (এসআাই) মো. শহিদুল ইসলাম ২০২০ সালের ১৩ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে এসআাই মো. শহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, অতিথি কর্মজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক মো. আব্দুল কালাম, অর্থ সম্পাদক মো. ফজলুল হক কালু ও সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ সমিতির কোনো হিসাব না দিয়ে ২১ লাখ ৮১ হাজার ৩৯২ টাকা আত্মসাৎ করেন এবং সমিতির মূল্যবান মালামাল ও কাগজপত্র নিয়ে বিক্রি করে দেন।

মাামলার বাদীকে হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করেন আসামি মো. আব্দুল কালাম। তিনি বলেন, আমি কি হুমকি দেওয়ার মানুষ? ভদ্র মানুষটির সঙ্গে আমার দেখা হচ্ছে না অনেকদিন।

এদিকে মামলার বাদির বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন, মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে সংবাদ প্রকাশ করান আসামীগন, যাহার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন মামলার বাদি অলি উদ্দিন।

তিনি বলেন, আমি মোঃ অলি উদ্দিন হাওলাদার চট্টগ্রাম হালকা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক।
(রেজিঃ চট্ট ২২৬০) অথিতি কর্মজীবি সমবায় সমিতির লিমিটেড এর সভাপতি। সম্প্রতি আমাকে জড়িয়ে আলোকিত প্রতিদিনসহ কয়েকটি অনলাইনে “থানার ক্যাশিয়ার পরিচয়ে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সোর্স অলি উদ্দিন” এমন শিরোনামে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত সংবাদ আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমি এসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন, মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অথিতি কর্মজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সাধারণত সম্পাদক থাকাকালীন মোঃ আবদুল কালাম ড্রাইভার সমিতির সদস্যদের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যেটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়ায় আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোঃ আবদুল কালাম ড্রাইভার আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আসছে। সাংবাদিক ভাইদের কাছে অনুরোধ, আপনারা এসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন,মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।

আমি কখনো কোন থানার ক্যাশিয়ার ছিলাম না, বর্তমানেও নেই। আমি একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান শ্রমিক নেতা ও ড্রাইভার। আমি তিন তিনবারের নির্বাচিত চট্টগ্রাম হালকা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করে আসছি। একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে আমার মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.