গাজীপুর টঙ্গিতে ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা জালাল মাহমুদ টুটুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

অপরাধ

রবিউল আলম,বিশেষ প্রতিনিধি :
খালে গোসল করাকে কেন্দ্র করে এলাকার কয়েকজন কিশোরের মারামারি হয়। মারামারির ঘটনা ঘটার পর শুভ নামে এক কিশোর তার মাকে জানান, তার মা সুমি আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিপক্ষের কিশোরদের গালাগাল করেন এবং প্রতিশোধ নিতে তার বড় ছেলে সুমনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।

সুমন ঘটনাস্থলে পৌঁছে কয়েকশো লোকের সামনে ‘আমি যুবলীগ নেতা জালাল মাহমুদ টুটুল ভাইয়ের লোক’ বলেই গামছায় পেঁচানো পিস্তল বের করে গুলি করতে উদ্যত হয়। এসময় উপস্থিত জনতা সুমনকে ঘিরে ফেলে এবং গণধোলাই দিয়ে অস্ত্রসহ পুলিশে সোপর্দ করে। অবৈধ পিস্তল প্রদর্শনের আগে ওই যুবক বারবার যুবলীগ নেতা জালাল মাহমুদ টুটুল লোক বলে দাবি করেন, কে এই জালাল মাহমুদ টুটুল…?

অনুসন্ধানে জানা গেছে,জালাল মাহমুদ টুটুল টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ ৫১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী। জানা যায় তিনি গাজীপুর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শান্ত বাবুর কর্মী। জালাল মাহমুদ টুটুলের রাজনৈতিক উত্থান টা বেশি দিনের না হলেও এলাকায় বেশ পরিচিত। এলাকার প্রতিটি অলিগলি , আঞ্চলিক সড়কের বৈদ্যুতিক খুঁটি সবখানে তার বড় বড় ব্যানার-ফেস্টুন। এসব ব্যানার-ফেস্টুন তিনি ব্যবহার করেন বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে অবৈধ ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে।

২০২১ সালের ২১ নভেম্বর দৈনিক সমকালে জাহাঙ্গীরের হাতে ‘জাদুর চেরাগ’ এই শিরোনামে প্রথম পাতায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয় প্রকাশিত সংবাদের ৮ কলমে প্রতিবেদেক উল্লেখ করেন,বহিস্কৃত মেয়রের পক্ষে সাতইশ এলাকায় চাঁদাবাজি ও ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন যুবলীগ নেতা মো.জালাল মাহমুদ টুটুল, বিপ্লব হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন। হেলালের নিয়ন্ত্রণে আছে দেওড়া ও মিলগেট এলাকা। এলাকাবাসীর অভিযোগ ছাড়া একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে তাদের চাঁদাবাজির তথ্য তুলে ধরা হয়। ঝুট ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রণ বন্ধ ও উদ্ভূত পরিস্থিতি সঠিকভাবে মোকাবিলা করা না গেলে মেয়রপন্থি ও মেয়রবিরোধী পক্ষের মধ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫১ নং ওয়ার্ডের একাধিক প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা জানায়, জালাল মাহমুদ টুটুল এখন ৫১ নং ওয়ার্ডের হর্তাকর্তা। পারিবারিক বিচার সালিশ,জমি নিয়ে বিরোধ, মারামারি সব ধরনের বিচার সালিশ বসে তার অফিসে। রাত হলেই জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে এই যুবলীগ নেতা। টুটুলের রয়েছে কিশোর গ্যাং যার একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন সুমন। শুধু তাইনা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তিকারী বহিস্কৃত গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বহিস্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সাথে এখনো গোপন সম্পর্ক রয়েছে তার।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর শোকজ করে জাহাঙ্গীর আলমকে। শোকজের ২২ দিন পরে ৫১নং ওয়ার্ড যুবলীগের কর্মী সভায় দেখা যায় যুবলীগের এই নেতা জাহাঙ্গীর আলমের ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে কর্মী সভায় যোগ দান করেন।

একাধিক জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণ ও বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে জালাল মাহমুদ টুটুলের কর্মী বলে সংবাদ প্রকাশ হলে,বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইবুকে তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে জালাল মাহমুদ টুটুল একটি পোষ্ট শেয়ার করেন। পোষ্টে তিনি উল্লেখ করেন, সাধারন মানুষের ভালোবাসা দেখেন এগুলো আমার জন্য দোয়া আর শক্তি ,এতো সোজা নয় যে এতো পরিশ্রম সাধারন মানুষের জন্য করা কাজ বিফলে চলে যাবে ,আপনরা যা মনে করছেন তা না! বহু বাঁধা বহু নাটক সাজিয়েছেন,কিছু কি লাভ হইছে,শুধু বলতে চাই দেশ ডিজিটাল সেকেনডে সব পাওয়া যাই,যাকে হাতিয়ার করছেন তার আইডিতে ডুকেন মাথা ঠিক হয়ে যাবে,হাসি পাই কতটা বোকামি কাজ করেন যদি পদবী এতো দরকার হয় কাজ করুন কাজে দিবো,দলের জন্য কাজ করুন পরিশ্রম করেন কাজে দিবো।

গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল বলেন,কোন চাঁদাবাজ,মাদক কারবারি, জুয়ারির ঠাঁই যুবলীগে হবে না। গাজীপুর মহানগর যুবলীগ সচ্ছতার সাথে কাজ করে আসছে। এই যুবলীগে নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অপকর্ম লিপ্ত হলে তাকে ছাঁড় দেওয়া হবে না।

এবিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান দীপু বলেন, অবৈধ পিস্তল প্রদর্শন কালে যুবলীগ নেতা লোক বলে ওই যুবক এলাকা বাসির কাছে পরিচয় দিয়েছে বিষয়টি এলাকাবাসীর কাছে শুনেছি৷ অস্ত্রের আসল মালিক কে কোথা থেকে অস্ত্রটি এলো এবিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। অপরাধী যেই হোকনা কেনো যেই দলেরই হোকনা কে কোন ছাঁড় দেওয়া হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.