এম শাহীন আলম :
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বর্তমানে পদে পদে অনিয়ম আর রোগীদের ভোগান্তির আতুঁর ঘরে পরিণত । আর স্হানীয় সাংবাদিকদের চোখে কাঠের চশমা পড়ার অভিযোগ, সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিদিন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা চিকিৎসার অপব্যবস্হাপনা নিয়ে কোনো অভিযোগ কিংবা প্রশ্ন তুললেই হাসপাতালে স্হানীয় সিন্ডিকেটের লোকদের দ্বারায় অত্যাচার ও হুমকি-ধমকির মুখে পরতে হয়,মাঝে মধ্যে মারপিটের মতো ঘটনাও ঘটে। আর এসব অনিয়মে সরাসরি কেউ প্রতিবাদ করলেই ডাক্তার,নার্স,কর্তব্যরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাৎক্ষণিক ধর্মঘটের হুমকি দেয়। সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ একশ্রেণীর দালালের কাছে জিম্মি যা চোখে পরার মতো। এই হাসপাতালটিতে কেউ স্হানীয় এমপি সাহেবের লোক,কেউ মেয়র সাহেবের লোক,কেউবা আবার স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের লোক পরিচয়ে যে যার ইচ্ছা মতো দাপট খাটিয়ে (দালাল চক্রটি) পদে পদে রোগী ও তাদের স্বজনদের নানাভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রতিনিয়ত প্রদর্শন করে থাকেন, যা দেখার কেউ নেই, এছাড়া হাসপাতালের আশপাশে নামে বেনামে অবৈধ প্রাইভেট ডায়াগন্টিক সেন্টার ও ঔষধ দোকানী দালালদের অত্যাচারে হাসপাতালে রোগী ও তাদের স্বজনেরা একেবারে অতিষ্ঠ, জানা যায়, এসব বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর বারবার উদ্যোগ নিলেও প্রশাসন হাসপাতালের নিয়ম-কানুন ও শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালটিতে প্রফেসর, সহযোগী প্রফেসরদের সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেলেও। তারা দিনের বাকি সময়টা বাইরে কোন না কোন প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে প্র্যাকটিস করার অভিযোগ রয়েছে,কোন কোন সময়ে তারা হাসপাতালে দ্বায় সাড়া ভাবে আসেন আর যান । ফলে তাদের কাছ থেকে সঠিক সেবা পায় না রোগীরা। ওই সময় কেবল ইন্টার্নি ডাক্তার নির্ভর চিকিৎসা চলে হাসপাতালটিতে। একই সঙ্গে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে রোগ নির্ণয়ের সব সরঞ্জাম থাকলেও অধিকাংশ সময় সেগুলো অকেজো বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এ সুযোগে একশ্রেণীর দালাল চক্র দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের সু-কৌশলে নিয়ে যায় হাসপাতালের বাহিরে থাকা নিজেদের প্যাথলজি ডায়াগন্টিক সেন্টারে। আবার কখনও কখনও ডাক্তার ও নার্সরা তাদের নির্ধারিত প্যাথলজি সেন্টারে রোগীদের ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে পাঠিয়ে দেন,জানা যায়, ডাক্তাররা তাদের পচন্দের ডায়াগন্টিক সেন্টারে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করলে তারা প্যাথলজি রিপোর্ট দেখতেই রাজি হন না । আর রীতিমতো রোগীদের গাইনি কিংবা যে কোন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে দেয়া হয় একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ব্যবস্হাপএ। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করা হয় না। হাসপাতালে পর্যাপ্ত রক্ত থাকলেও রক্ত কিনতে হচ্ছে সিন্ডিকেটের কাছ থেকে। আর এসব সিন্ডিকেটের কারণে বাইরে থেকে পরীক্ষা ছাড়াই রক্ত নিয়ে আসেন রোগীর স্বজনরা। বেশিরভাগ রোগীর বেলায় রক্ত ব্যবহার না হলেও এসব রক্ত চোরাইপথে আবার নিয়ে যাওয়া হয় ওই সব প্যাথলজি সেন্টারে। হাসপাতালের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে বিশেষ সূএে জানা যায়। অপারেশন থিয়েটারকে ঘিরে চলছে রমরমা বাণিজ্য। একজন রোগীর বেলা যতটুকু সার্জারি সরঞ্জামাদি প্রয়োজন তার চেয়ে দ্বিগুণ সরঞ্জামাদি লিখে দেয়া হচ্ছে। কখনও কখনও দালালদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে রোগীর স্বজনরা এক হাজার টাকার সরঞ্জাম ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাইরে থেকে ওষুধ আনার জন্য শতাধিক দালালের সমন্বয়ে রয়েছে সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালের ভেতর পুলিশের সহায়তায় দেদাছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, হাসপাতালের বাইরে থাকা ফার্মেসিগুলোয় নিয়োজিত দালালদের দৌরাত্ম্য কোন ভাবেই কমছে না। বরং দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিতরে ব্রাদার্স ও নার্স এবং আয়াদের বেড কেবিন নিয়ে বাণিজ্যের তো শেষ নেই। নতুন ভর্তি হতে আসা রোগীদের কাছে বেড সংকটের কথা জানিয়ে দেয়া হয়। বেড খালি থাকলেও তাদের দেয়া হয় না। পরে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা আদায়ের পর তাদের বেড দেয়ার অহরহ অভিযোগ পাওয়া যায়। আর এ বেডের চার্জ হিসেবে নিয়মিত টাকা পরিশোধ করতে হয় রোগীদের স্বজনদের। জরুরি অসুস্থ রোগীদের আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে ট্রলি মেলে না প্রায় সময়। ট্রলি বহনকারী কর্মচারীরা রোগী আনা-নেয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে ট্রলি মিলে, অন্যথায় স্বজনদের কাঁধে ভর দিয়ে রোগীদের চলতে হয়। হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড, করোনারি ওয়ার্ড, সার্জারি ওয়ার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোয় ডাক্তারদের অবহেলা উল্লেখযোগ্য। সরেজমিনে দেখা যায়,হাসপাতালটিতে ইমারজেন্সিতে প্রতিটি রোগী থেকে কোন না কোন অজুহাতে দেখিয়ে নেওয়া হয় বিভিন্ন অংকের টাকা,আর টাকা না দিলেই চলতে থাকে অশুভ আচরণ যা একেবারে ন্যাক্কারজনক, এছাড়াও ওয়ার্ডে বেশিরভাগ জরুরি রোগী থাকলেও প্রফেসর ও সহযোগী প্রফেসরদের সময় মতো না পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মারা যাচ্ছে। এসব বিষয়ে হাসপাতালে অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনের টনক না নাড়ার অভিযোগের অন্ত নেই।হাসপাতালটির প্রতিটি গেইটে আউটসোর্সিং দারোয়ানরা টাকা ছাড়া রোগী স্বজনদের ভিতরে ঢুকতে দিতেই নারাজ এবং রোগীর স্বজনদের সাথে দূরব্যবহারের তো শেষ নেই,টাকা দিলেই নিমিষেই হাসপাতালে সকল সুবিধা মিলে, বাহিরে এম্বুলেন্সের ড্রাইভারদের হয়রানির মধ্যে পরতে হয় প্রায় রোগী এবং তাদের স্বজনদের,আর অন্য দিকে স্হানীদের অভিযোগ এতো এতো অনিয়ম হচ্ছে হাসপাতালটিতে তারপরও স্হানীয় কিছু সাংবাদিকদের নিজ চোখে দেখেও তাদের চোখে কাঠের চমড়া পড়ার মতো অবস্থা,নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন স্হানীয় লোকজন ক্ষোভ নিয়ে জানান,দৈনিক কুমিল্লার কাগজ পএিকাটি এতো সুনাম ধন্য পএিকা প্রায় প্রতিদিনই তো তাদের একজন প্রতিনিধিকে হাসপাতালের আশপাশে দেখা যায় কই তিনি তো এসব বিষয়ে কখনো নিউজ করতে দেখি না,প্রায় সময় দেখি কুমিল্লার কাগজ পএিকার প্রতিনিধি হাসপাতালের কর্তব্যরত লোকদের সাথে আড্ডাবাজিতে ব্যস্ত থাকে তিনি তো কখনো হাসপাতালের অনিয়ম নিয়ে নিউজ করে না এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চেয়ে হাসপাতালটির পরিচালকে তার মুঠো ফোনে কল দিলে তার মোবাইলে সংযোগে পাওয়া যায়নি,পরবর্তী অনুসন্ধানে ধারাবাহিক ভাবে পরের সংখ্যায় প্রকাশ করা হবে