জেনে নিন ভালোবাসা দিবসের উৎপওির ইতিহাস

ফিচার

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ এলেই ভালোবাসা নাড়া দিয়ে ওঠে নতুন করে। ১৪ ই ফেব্রুয়ারি দিনটি ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়। তবে অধিকাংশ দেশে একটি ছুটির দিন নয়।

বর্তমানে বাংলাদেশেও দিনটি উদযাপন করা হয় বেশ আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে, বিশেষ করে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের এদিনটির প্রতি বেশি আগ্রহ থাকে। তবে ভালোবাসা দিবস উদযাপন নিয়ে নানান জনের নানান মতামত রয়েছে। কেউ কেউ আবার এটিকে পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতি ও বলে থাকেন। তবে যে যাই বলুক প্রেমিক-প্রেমিকারা আবার এটি মানতে নারাজ, তারা এই দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। আবার কেউ কেউ দিনটি ঘটা করে উদযাপন করলেও জানেনা এই দিনটি কেন পালন করা হয়, আসলে ভালোবাসা দিবস কি? কেনইবা ভালোবাসা দিবস পালন করা হয়? ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন’স ডে এর ইতিহাস কি?

তাহলে চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে কিছু তথ্য:
ভালোবাসা দিবস উদযাপন করা হয় বাৎসরিক ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, এর আনুষ্ঠানিক নাম, “সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে”।
উইকিপিডিয়ার সূত্র মতে দিনটির ধরন, সাংস্কৃতিক, খ্রিস্টান, বাণিজ্যিক।
৪৯৬ সালে জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন’স স্মরণে ১৪ ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করা হয়।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি যে ভ্যালেন্টাইন’স ডে পালন করা হয় তা ক্যাথলিক গির্জা কর্তৃক নির্দিষ্ট। কিন্তু অর্থডক্স গির্জা কর্তৃক এটি জুলাই এর ৭ তারিখ পালন করা হয়।
এবার জেনে নেওয়া যাক ভালবাসা দিবসের ইতিহাস:
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস নিয়ে বেশ কয়েকটি ঘটনা প্রচলিত আছে তার মধ্যে একটি, ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের কথা। ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাই তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন’স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। – (বাংলা উইকিপিডিয়ার সূত্র থেকে)

এছাড়া প্রচলিত আরেকটি ইতিহাস হল, ২৭০ খ্রিষ্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস নারী-পুরুষের বিবাহ বাধনে আবদ্ধ হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তার ধারণা ছিল, বিবাহ বাধনে আবদ্ধ হলে যুদ্ধের প্রতি পুরুষদের অনীহা সৃষ্টি হয়। সে সময় রোমের খ্রিষ্টান গির্জার পুরোহিত ‘ভ্যালেন্টাইন’ রাজার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে গোপনে নারী-পুরুষের বিবাহ বাধনের কাজ সম্পন্ন করতেন। এ ঘটনা উদঘাটিত হওয়ার পর তাকে রাজার কাছে ধরে নিয়ে আসা হয়। ভ্যালেন্টাইন রাজাকে জানালেন, খিষ্টধর্মে বিশ্বাসের কারণে তিনি কাউকে বিবাহ বাধনে আবদ্ধ হতে বারণ করতে পারেন না। রাজা তখন তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করেন। কারাগারে থাকা অবস্খায় রাজা তাকে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে প্রাচীন রোমান পৌত্তলিক ধর্মে ফিরে আসার প্রস্তাব দেন এবং বিনিময়ে তাকে ক্ষমা করে দেয়ার কথা বলেন। ভ্যালেন্টাইন রাজার প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানালেন এবং খ্রিষ্ট ধর্মের প্রতি অনুগত থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন। তখন রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন। অত:পর রাজার নির্দেশে ২৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। পরবর্তীতে ওই দিনের স্মরণে ৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করা হয়।

তবে ইতিহাস যাই হোক, বর্তমানে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি কমার্শিয়াল ডে, আবার ধর্মীয় চেতনার বিপরীতে যাওয়ায় অনেক দেশে ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও ইদানিং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের উপর।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.