বিশেষ প্রতিনিধি :
কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানার রানীর বাজার রোডস্হ মডার্ন স্কুলের গেইটের রাস্তার উপর ৩০ শে ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) আনুমানিক ১২টার দিকে একদল সন্ত্রাসী এসে লালমাই এলাকার সংবাদ কর্মী মোঃ মামুন চৌধুরী নেতৃত্বে আনুমানিক অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ব্যক্তি ফটোগ্রাফার সহিদুল ইসলাম সাকিবের উপর অতর্কিত হামলা চালালে রক্তাক্ত জখম অবস্থা স্থানীয়রা পুলিশ কে খবর দিলে পুলিশ এসে আহত ফটোগ্রাফার সহিদুল ইসলাম সাকিব কে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন।
ফটোগ্রাফার সহিদুল ইসলাম সাকিব বিকেলে স্বশরীরে গিয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় ২ জন কে আসামী করে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন দিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সুত্রে জানা যায় – লালমাই এলাকার সংবাদ কর্মী মোঃ মামুন চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী রোজিনা আক্তার সহ তার সঙ্গী অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। সহিদুল ইসলাম সাকিব পেশায় একজন কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বাংলার আলোড়ন পএিকার ফটোগ্রাফার ।
ফটোগ্রাফার সহিদুল ইসলাম সাকিব অভিযোগে উল্লেখ করেন- আমি ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১২ টার সময় অত্র থানাধীন রানীর বাজার রোডের মডার্ণ হাই স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য এবং শিক্ষার্থীদের ছবি তুলতে মডার্ন স্কুলে যাই। পরে বাহিরে বের হওয়ার সময় স্কুলের গেইটের সামনে মামুন চৌধুরী নামে সন্ত্রাসী আমাকে ডাক দিয়ে আমার পথ-রোধ করিয়া চিৎকার দিয়ে বলে যে তোরে অনেক দিন ধরে খুঁজছি আজ তোরে পাইছি পিটাইয়া মাইরা ফালামু এই কথা বলিয়া মামুন চৌধুরী আমার শার্টের কলার চাপিয়া ধরে আমাকে এলোপাথাড়ি ঘুশি, লাথি,মেরে আমার মুখে, ঠোঁটে, গালে, মাথায়, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে মামুন চৌধুরীসহ তার সঙ্গীরা। আমাকে হত্যার উদ্দ্যেশে দুই হাত দিয়ে আমার গলা চাপিয়া ধরে আমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে। আমি কোন রকম রক্ষা পেয়ে চিৎকার করলে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা এবং অভিভাবকরা এসে আমাকে রক্ষা করে। বিবাদী মামুন চৌধুরীসহ অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জন ধারালো ছুরি চাকু দিয়ে আমাকে ঘাই দিয়ে খুন করার চেষ্টা করিলে আমি শিক্ষকদের সহযোগিতায় সরে গিয়ে রক্ষা পাই। বিবাদী মামুন চৌধুরীর স্ত্রী রোজিনা বেগম ও তার সঙ্গী অজ্ঞাতনামাদের আমার সঙ্গে থাকা আমার পেশাগত কাজে ব্যবহৃত ক্যামেরা ক্যানন ৬০ডি. ডিএসএলআর আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য জুড়াজুড়ি করে আমি ক্যামেরা ধরে রেখে রক্ষা করি, বিবাদী মামুন চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী রোজিনা আমার সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ ৭হাজার ৫শ টাকা, গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন এবং মানি ব্যাগ নিয়ে যায়। আমি চিৎকার চেঁচামেচি করিলে পথচারী লোকজন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীরা ও আশপাশের লোকজন আগাইয়া এসে তাদের কবল থেকে আমাকে রক্ষা করে।
ফটোগ্রাফার সহিদুল ইসলাম সাকিব মামলায় আরও উল্লেখ করেন যে- বিবাদী সন্ত্রাসী মামুন চৌধুরীসহ সঙ্গীরা আমাকে প্রকাশ্যে ভয়-ভীতি প্রদর্শন-সহ হুমকি দিয়ে বলে যে কাউন্সিলর সোহেল কে হত্যা করা হয়েছে তোর মত সাংবাদিক সাকিব্বারে মারলে কিছুই হবে না। আমাকে নাকি নির্বাচন কেন্দ্রে খোঁজে এসেছে আমাকে নির্বাচন কেন্দ্রে পেয়েও পুলিশ জন্য সুযোগের জন্য কিছুই করতে পারেনি। আমি কাজের জন্য বাহিরে গেলে আমাকে সুযোগ মতো পাইলে মারধরসহ খুন-জখম করিয়া ফেলবে, আমি কিভাবে সাংবাদিকতা করি আমাকে দেখাইয়া দিবে বলে হুমকি দেন।
ফটোগ্রাফার সাকিব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন-
এমন ভাবে অপরাধ মূলক আচরণ ও হুমকি-ধমকিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আশংকা করিতেছি যে বিবাদী ধারা আমার যে জান-মাল সম্পদ সম্মানের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যে কোন সময় সন্ত্রাসী ধারা আমার খুন হতে পারে। দয়াকরে তদন্ত করুন, না হলে আমাকে সন্ত্রাসীরা সুযোগ পাইলেই মেরে ফেলবে। ঘটনার পর আমি সাক্ষীদের সহায়তায় কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে জখমী অবস্থা গিয়ে চিকিৎসা করে এ ব্যাপারে আমার সহকর্মীদের এবং পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে আলাপ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ নিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এসে মামুন চৌধুরী সহ তাঁর স্ত্রী রোজিনা বেগম এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করি।
কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত কমল কৃষ্ণ ধর বলেন- আমরা ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফটোগ্রাফার সাকিব কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন। ফটোগ্রাফার সাকিব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। যারাই ঘটনার সাথে জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ মফিজুল ইসলাম মফিজ বলেন- আমি ঘটনা শুনেছি এবং সাংবাদিক সাকিব আহত অবস্থায় ফেসবুকে যে লাইভ করেছে তার ভিডিও দেখেছি, যেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার হাতে অভিযোগের কপি পেয়েছি।