খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে ৪৫ পদ শুন্য থাকলেও নিরলস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডাঃ মিজান

স্বাস্থ্য

মহিদুল ইসলাম ( শাহীন) :
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৭১ পদের মধ্যে ৪৫ পদ শুন্য থাকলেও ১২৬ জন জনবল দিয়ে শতভাগ সাধারন সেবা (বহিঃবিভাগ অন্তঃবিভাগ) করোনা রোগীর সেবা ও অপারেশন সহ সকল প্রকার স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে চলেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান। অর্ধশত পদ শুন্য থাকলেও মহামারী করোনা বটিয়াঘাটায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি বরং সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছেন শুধু তার দিনরাত খোঁজখবর নেওয়া ও সুন্দর নেতৃত্ব প্রদানের জন্য এই অসাধ্য কাজ স্বার্থক হয়েছে। ইউএইছএফপিও এবং আরএমওর নেতৃত্বে একযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ইউনিয়ন ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকে করোনা টিকা দেওয়া তার উল্লেখ যোগ্য একটি সাফল্য বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে স্বাক্ষাতে এ তথ্য জানান। বটিয়াঘাটা উপজেলা ৭ টি ইউনিয়ন এবং ৬৩ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ সাড়ে ৪৮ হাজার। প্রতিদিন স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার রুমের সামনে রোগীর লাইন দেখলে মাথায় হাত উঠে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে লাইনে দাড়িয়ে থাকা রোগী প্রদীপ কুমার মন্ডল (৬০) বলেন, আমি আগে একবার মিজান স্যারকে দেখাইছি,এখন আমি অনেক সুস্হ,তাই আরেক বার দেখাতে এলাম। আগে কখনও কোন টিএইচও স্যারকে এতো রোগী দেখতে দেখিনি। তবে তার ব্যবহারের কারণে এতো বেশি রোগী আসে। আনোয়ারা বেগম (৫৫) এক রোগী বলেন, এই ডাক্তার সম্পর্কে আমার বাড়ির পাশের একজনের মুখে শুনে আমি এলাম। উনি আসলে সবার সঙ্গে হেঁসে হেঁসে কথা বলেন এবং তার দেওয়া ঔষধে কাজ হয় যে কারণে বার বার ছুটে আসি। অন্যদিকে, হাসপাতালে ৩য় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী অনেক কম,এমনকি অপারেশনের জন্য নেই অজ্ঞান করা ডাক্তার। ৫০ শয্যা হাসপাতাল অথচ ম্যন পাওয়ার সেভাবে নেই। এখানে মেডিকেল অফিসার ও নার্স পর্যাপ্ত রয়েছে কিন্তু গুরুত্ব পুর্ণ টেকনিশিয়ান ,SACMO ,৩য় ও ৪থ পদ শূন্য রয়েছে।
সার্বিক বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, হাসপাতালে ৪৫পদ শুন্য। এছাড়া আউট সোরসিং জনবলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় লোক বলের অভাবে হাসপাতাল পরিস্কার পরিছন্ন রাখা ও অন্যান্য সেবা দেয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। তারপরেও সল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে শতভাগ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। হসপিটাল সার্ভিস স্কোরে ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থান চলতি মাসে ৫৪ তম এবং খুলনা জেলায় ২য় অবস্থানে। আমি অফিস শুরু থেকে শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত রোগীর সেবায় ফিল্ড দেখা ও মনিটরিং এর কাজে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ থাকা অপারেশন কার্যক্রম আমি চালু করলেও নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য অভিজ্ঞ ৬জন মিডওয়াইফ নার্স ২৪/৭ সেবা চালু থাকলে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা বাড়ছেনা। কারন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন হাসপাতালে গর্ভবতী মায়েরা ৪ বার চেকআপ করতে আসলেও শেষবারে আসেনা। দালাল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারা অন্যত্র চলে যায়। সিজার এর সংখ্যাও কম হচ্ছে একই কারনে। বিষয়টি সবাই সচেতন হলে হাসপাতালের নরমাল ডেলিভারির পাশাপাশি সিজার এর পরিমান ও বাড়বে। এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগিতা চান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.