গাজীপুর টঙ্গীতে আউট সোসিং কর্মচারী সরকারি কর্মকর্তার চেয়ারে বসে হাসপাতাল চালানোর অভিযোগ

অপরাধ

রবিউল আলম,বিশেষ প্রতিনিধি :
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল,শিল্পনগরী অধ্যুষিত ব্যস্ততম এই নগরীর একমাত্র সরকারি চিকিৎসালয় এটি। এই হাসপাতালের চুক্তিভিত্তিক ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার এর হাতে জিম্মি সবাই। ডাক্তার থেকে শুরু করে নিম্ন শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত তার হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ বিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী কাছে অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের স্টাফ ও নার্সরা। তবুও দৃশ্যমান তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয় হয়নি ওয়ার্ড মাস্টার তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়ের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার সকালে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টঙ্গী প্রতিনিধি দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

মো.শাকিল টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক ( আরএমও) ডাঃ পারভেজের বক্তব্য নিতে গেলে আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসকের সামনেই ওই সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত করে ওয়ার্ড মাস্টার তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়।
সেই সময় আরএমও পারভেজ হোসনে কক্ষে উপস্থিত ছিলেন আরএমও ডা.পারভেজ, জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসা, তৌহিদুল ইসলাম হৃদয় ও আরএমও ডা.পারভেজের পিয়ন।

ঘটনার সময় গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়ার সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছয়, হৃদয় সংবাদ কর্মী শাকিলকে বার বার আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা (আরএমও) ডাঃ পারভেজ এর রুম থেকে বের হও বের হও বলে টানা হেচর করছে। একপর্যায়ে সংবাদ কর্মী ব্যবহারিত মুঠোফোন কেরে নেওয়া চেষ্টা করে অভিযুক্ত হৃদয়। অভিযুক্ত হৃদয় সংবাদ কর্মীকে আংগুল উচিয়ে হুশিয়ার দিয়ে বলছে শাকিল ভালো হয়ে যাও তোমার নামে অনেক অভিযোগ আছে আমার কাছে। এসময় নিজের অপরাধ ধামাচাপা দিতে সংবাদ কর্মী শাকিলের বিরুদ্ধে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠায় কথিত ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়।

অভিযোগ রয়েছে,২০২০ সালের ১৭ই মে কথিত ওয়ার্ড মাস্টার হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মশিউর রহমানকে হত্যার হুমকিরও প্রদান করে। হত্যার হুমকি প্রদানের প্রতিবাদে ওই দিন বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘন্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে হাসপাতালের সকল নার্সরা।এছাড়াও ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মারধোর সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এই কথিত ওয়ার্ড মাস্টার তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়। আউট সোর্সিং কর্মচারি তৌহিদুল ইসলাম হৃদয় কোন সরকারী তালিকা ভুক্তভো কর্মচারি না হলেও। জোরপূর্বক ওয়ার্ড মাষ্টার পদবী গ্রহন করে ক্ষমতার দাপটে একের পর এক অনৈতিক কর্মকান্ড ঘটাচ্ছেন।দখল করে আছে বিলাসবহুল অফিস রুম। ব্যবহারিত মোটর সাইকেলে ব্যবহার করছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার লিখা সম্মিলিত সরকারি লোগো।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রয়েছে হৃদয়ের অদৃশ্য হাত।

এ বিষয়ে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা ( আরএমও) ডাঃ পারভেজ বলেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেহেতু ভুক্তভুগি ওই সংবাদকর্মী থানায় অভিযোগ করেছে আমরা বিশ্বাস করি থানা পুলিশের সঠিক তদন্ত মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে জানান, হৃদয় ঘটনাটির বিষয় ভুক্তভোগী ওই সংবাদকর্মী থানায় অভিযোগ করেছে। পাশাপাশি হাসপাতালে পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক ডা.পারভেজ ও ডা. মাসুদ রানাকে এই তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সংবাদকর্মীকে লাঞ্চিত করার বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি জাভেদ মাসুদ বলেন, সংবাদকর্মীরা নিরলস সমাজের অসহায় নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সাথে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। লাঞ্ছিতের ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়।এঘটনায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.