সাজ্জাদুল কবীর :
বর্তমান সময়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলাসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অসহায় মানুষদেরকে খাদ্য সামগ্রী ঘরের দরজায় পৌঁছে দেয়াসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে।
দেশের বর্তমান সংকটময় মূহুর্তে প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারনের বেশী কাছে থেকেছেন ৩ শ্রেণির সদস্যরা। (১)চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স, হাসপাতালে কর্মরত অন্যান্য কর্মচারীরা, (২)আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা এবং (৩)সংবাদ কর্মী বা সাংবাদিকরা।
ত্রাণ বা খাদ্যসামগ্রীসহ অন্যান্য সুবিধা বন্টনকারী বা এ কর্মে নিয়োজিত ও সহযোগীতাকারী দলীয় নেতা কর্মীদেরও অবদান প্রশংসার দাবী রাখে।
দু:স্থ অসহায় ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সর্বপরি নিম্নবিত্তরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছেন। নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি না পারছে হাত পাততে, না পারছে লাইনে দাড়িয়ে খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করতে।
আমার বক্তব্য ৩ নম্বরে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নিয়ে। ১ম ও ২য় নম্বরে উল্লেখিত ব্যক্তিরা বেতনসহ অন্যান্য সরকারী বা বেসরকারী সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। কিন্তু ৩ নম্বরে উল্লেখিত ব্যক্তিদের অর্থাৎ সাংবাদিক বা সংবাদ কর্মীদের অধিকাংশরাই না পায় বেতনভাতা না পায় সরকারী সহযোগীতা। মিডিয়া লিস্টেড না হওয়ায় অনেক পত্রিকার সম্পাদকরাও ব্যাপক দৈন্যতার মাঝেও পত্রিকা প্রকাশ করে টিকে রয়েছেন। অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর সমস্যাতো রয়েই গেছে। যারা নিয়মিত তাদের অনলাইন পোর্টালটি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা জানেন বিজ্ঞাপন সুবিধাছাড়া দ্রুততার সাথে নিউজ পাবলিশ করতে তাদের পকেট থেকে কি পরিমান অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের মাননীয় চেয়ারম্যান বিচারপতি জনাব মমতাজ উদ্দীন আহমদ সারা দেশের জেলা প্রশাসক মহোদয়দের স্ব স্ব এলাকায় কর্মরত সাংবাদিকদের তালিকা করার কথা বলেছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের প্রণোদনা দেয়ার বিষয়েও বলেছেন। এ বিষয়গুলি এখনও আমাদের কাছে পরিষ্কার নয় যে, আমরা তালিকাভুক্ত হয়েছি, না কি হই নাই এবং আমরা এই সংকটময় মূহুর্তে কি কোন আর্থিক সুবিধা পাচ্ছি, না কি কোন কিছুই পাব না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা রয়েছে এবং অচিরেই আমরা সুফল পাব এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস ।
আমার মতে নিচে উল্লেখিত প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই করে দু:স্থ ও অসহায় এবং আর্থিক সংকটে থাকা সাংবাদিক বা সংবাদ কর্মীসহ সম্পাদকদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে।
(১) জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের বা সংবাদ কর্মীদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকদের দপ্তরে আবেদন চাওয়া যেতে পারে।
(২) আবেদনের সাথে প্রত্যেকের পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এনআইডির ফটোকপি এবং পত্রিকা বা পোর্টালের পরিচয়পত্রের ফটোকপি, যোগাযোগের জন্য ই-মেইল ও মোবাইল নম্বর চাওয়া যেতে পারে।
(৩) আবেদনকারী যে সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেন সে মাধ্যমে তার নামে প্রকাশিত সংবাদের কপি চাওয়া যেতে পারে।
(৪) প্রয়োজনে সম্পাদকের স্বীকৃতিপত্র চাওয়া যেতে পারে।
(৫) কমপক্ষে তিন মাসের অধিক সময় ধরে যারা কর্মরত আছেন তাদের বাছাই করা যেতে পারে।
(৬) দৈনিক, সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদকদের ক্ষেত্রে ডিক্লারেশনের কপি এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালের ক্ষেত্রে ডমেইন হোস্টিং নম্বরসহ ওয়েবসাইট নম্বর চাওয়া যেতে পারে।
(৭) অনলাইন নিউজ পোর্টালের ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিন মাস চালু রয়েছে কিনা, নিয়মিত প্রতিদিন নিউজ পাবলিশ করা হয় কিনা এবং মানসম্মত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে কিনা তা পরীক্ষা করা যেতে পারে (এসকল তথ্য পোর্টালটির ওয়েবসাইট ভিজিট করলেই পাওয়া যাবে)।
(৮) সকল প্রকার যোগাযোগ জেলা প্রশাসক মহোদয়দের দপ্তরের কোন ই-মেইলের মাধ্যমে করা যেতে পারে।
(৯) যাচাই বাছাই শেষে ই-মেইল বা মোবাইলে মেসেজ দিয়ে ডাকা যেতে পারে বা অন্য কোন নির্ভরযোগ্য উপায়ে আর্থিক সহায়তা করা যেতে পারে।
(১০) যে কোন জটিলতা নিরসনে ই-মেইল বা মোবাইলে মেসেজ দিয়ে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
আমার মনে হয় উল্লেখিত পদ্ধতিতে দেশের মিডিয়া জগতের বঞ্চিত গোষ্ঠী উপকৃত হবেন। আমি তাদের কথা বলছি, যারা ওয়েজ বোর্ডের সুবিধা ভোগ করছেন না, যারা বড় বড় মিডিয়ায় কাজ করে ভাল বেতনভাতা ভোগ করছেন না। আমি তাদেরই কথা বলছি, যারা সকল প্রকার সুবিধা বঞ্চিত নিবেদিত সাংবাদিক বা সংবাদ কর্মী, যারা সৎভাবে কাজ করতে গিয়ে আর্থিক অনটনে থাকেন প্রতিনিয়ত। তারা তো এ দেশেরই সন্তান। তাদের পরিবার পরিজন আছে। এই ঈদের আগে পাক না তারা কিছু।