মাসুদ রানা,পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) থেকে :
মানুষ মানুষের জন্য একটি অটোরিকশা বদলে দিতে পারে দুদু মিয়ার কষ্টের জীবন,গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী পৌর এলাকার শিবরামপুর গ্রামের মৃত সালামের ছেলে দুদু মিয়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাঁর বয়স এখন ৫২ বছর। ১৮ বছর আগে একটি বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় হারিয়েছিলেন ডান হাত। কিন্তু এ জন্য দমে যাননি তিনি। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য তিনি এখন পলাশবাড়ী পৌর শহরে এক হাতে ভাড়া রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। একটি রিকশা জন্য একাধিকবার চেষ্টা করলেও তা পাননি। পলাশবাড়ী শহরের বিভিন্ন এলাকায় যাত্রী নিয়ে এক হাতে রিকশা চালাতে দেখা যায় দুদু মিয়াকে। এ সময় রিকশা থামিয়ে কীভাবে পঙ্গু হলেন দুদু জানতে চাইলে সে কাহিনী বলেন এ প্রতিনিধির কাছে। দুদু বলেন, বাবা মার একমাত্র ছেলে আমি। তাঁর বাবা দিনমজুর ছিলেন। সামান্য আয় দিয়ে বাবা সংসার চালাতে পারতেন না। তাই লেখাপড়া করতে পারেননি। তাই মাত্র ৩৪ বছর বয়সে এক আত্মীয় তাকে এক বাড়িতে দিনমজুরের কাজ নেন দুদু। ওই বাড়িতে গাছ কাটার সময় আকস্মিকভাবে তিনি বিদ্যুতায়িত হন। এতে তাঁর ডান হাত সম্পূর্ণ ঝলসে যায়। এরপর দীর্ঘদিন রংপুরে একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে।ওই সময় প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর ডান হাতটি সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়। ডান হাত হারিয়ে দুদু হয়ে যান পঙ্গু। এরপর দুদু দীর্ঘদিন পর চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে। বাড়িতে এসে কয়েক বছর বিশ্রামে থাকেন তিনি। এরপর জীবিকার তাগিদে ভাড়া নিয়ে রিকশা চালাতে শুরু করেন তিনি। প্রথম প্রথম এক হাত দিয়ে রিকশা চালাতে কষ্ট হতো। যাত্রীরাও তাঁর রিকশায় ওঠতে ভয় পেতেন। কিন্তু আস্তে আস্তে রিকশা চালানোয় তাঁর হাত পাকা হয়ে ওঠে। এখন এক হাত অর্থাৎ শুধু বাম হাতেই তিনি দক্ষতার সঙ্গে রিকশা চালাতে পারেন। প্রায় প্রতিদিনই শিবরামপুর গ্রামের বাড়ি থেকে পলাশবাড়ী পৌর শহরে এসে দিনভর রিকশা চালান। শরীর খারাপ থাকলে রিকশা চালান না। দুদুর ঘরে ৪ছেলে ১ মেয়ে জন্ম নিয়েছে। এতে তাঁর দুঃখ নেই। তাই রিকশার চাকা ঘুরাইয়াই জীবন চালাইতাছি।
সরকারের কাছে অনুরোধ একটা অটোরিকশা দেওয়া হয়।
যোগাযোগ –
পলাশবাড়ী পৌর, গ্রাম– শিবরামপুর
নাম, দুদু মিয়া।
মোবাইল–০১৭৫৮১৯৯৫৭৮